কাবুলে মুছে ফেলা হচ্ছে নারীদের ছবি

কাবুলে মুছে ফেলা হচ্ছে নারীদের ছবি

সশস্ত্র কট্টর ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান দেশ দখলে নেওয়ার পর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যেতে শুরু করেছে; আর এই বদলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে, কাবুলজুড়ে দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা নারীদের ছবি মুছে ফেলার পাশাপাশি বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ডও গুঁড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে।

তড়িৎ গতির অভিযানের মাধ্যমে ইসলামি এই গোষ্ঠীর সদস্যরা একের পর এক প্রদেশ দখল করে নেওয়ার পর গত রোববার রাজধানী কাবুলে ঢুকে পড়ে। কাবুল দখলের মুখে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দেশ থেকে পালিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ায় এখন সরকার গঠনের দিকে এগোচ্ছে তালেবান।

তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসায় অতীতে তাদের নিষ্ঠুর শাসনের ভয় তৈরি হয়েছে আফগানিস্তানজুড়ে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে তালেবানের শাসনের সময় নারীদের শিক্ষা এবং চাকরির অধিকার ছিল না। তারা কোনও পুরুষ সঙ্গী ছাড়া একা বাড়ি থেকে বের হতে পারতেন না।

২০০১ সালে টুইন টাওয়ার আক্রান্ত হওয়ার পর আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোটের অভিযানে তালেবানের সরকার পতনের দুই দশকে দেশটিতে এক সময়ের নিষিদ্ধ শত শত বিউটি পার্লার কাবুলে আবারও চালু হয়। এসব পার্লারে নারীরা মেক-আপ এবং ম্যানিকিউরের ব্যবসা করেন। তালেবানের শাসনের সময় নারীদের জনসম্মুখে আপাদমস্তক ঢেকে আসা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল।

কিন্তু তালেবান রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখানকার বিউটি পার্লারের দেওয়ালে আঁকা নারীদের হাস্যোজ্জ্বল বিয়ের সাঁজের ছবি মুছে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। অনেক বিউটি পার্লারের মালিক তালেবানের নির্দেশে নারীদের ছবি মুছে ফেলতে শুরু করেছেন।

ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি বলছে, মঙ্গলবার কাবুলের একটি সড়কে অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে তালেবানের যোদ্ধাদের টহল দিতে দেখা যায়। সে সময় তালেবানের যোদ্ধারা একটি বিউটি পার্লারের বাইরে দেওয়ালে নারীদের ছবি কালো কালি দিয়ে ঢেকে দেন।

কাবুলের বিউটি পার্লারের এক মালিক এএফপিকে বলেন, তালেবান আবার ক্ষমতায় ফিরলে তার ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২৭ বছর বয়সী ওই তরুণী বলেন, তারা আবারও ক্ষমতায় ফিরলে এখন আমাদের যে স্বাধীনতা আছে তা কখনোই থাকবে না।

‌‘তারা চায় না নারীরা কাজ করুক।’

আপনি আরও পড়তে পারেন